সব
ব্যারিষ্টার তারেক চৌধুরী জানান, চুক্তি অনুযায়ী,যুক্তরাজ্যে আসা আশ্রয়প্রার্থী, অভিবাসীদের একটি অংশকে যুক্তরাজ্য সরকার রুয়ান্ডা পাঠিয়ে দেবে। এসব আশ্রয়প্রার্থীদের সেখানে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হবে। এদিকে,চলতি মাসের শুরুতে প্রায় একই ধরনের একটি আইন পাস করেছে ডেনমার্কও। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, দেশটিতে আসা আশ্রয়াপ্রার্থীদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে আফ্রিকার তৃতীয় কোনও দেশে। এ জন্য ডেনিশ সরকার রুয়ান্ডার সঙ্গে সমঝোতা চুক্তিও করেছে।
এছাড়াও তিউনিসিয়া, ইথিওপিয়া, মিসর ও ইরিত্রিয়ার সঙ্গেও আলোচনা চলছে বলে খবর প্রকাশ করেছে দেশটির বিভিন্ন গণমাধ্যম।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদনের প্রক্রিয়াটিও সম্পন্ন করবে যেই দেশে তাদেরকে পাঠানো হবে সেই দেশের কর্তৃপক্ষ। আশ্রয় আবেদন গৃহীত হলে ডেনমার্কে নয়, বরং তাদের থাকতে হবে সেই দেশেই। অর্থাৎ কাউকে যদি রুয়ান্ডায় পাঠানো হয় এবং তার আশ্রয় আবেদন গৃহীত হয় তাহলে সেই অভিবাসীকে রুয়ান্ডাতেই থাকতে হবে।
যুক্তরাজ্যে অভিবাসী, আশ্রয়প্রার্থীদের রাখার জন্য রুয়ান্ডাকে প্রাথমিকভাবে প্রায় ১৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার দেবে যুক্তরাজ্য৷ চুক্তির পাশাপাশি অভিবাসী, আশ্রয়প্রার্থীদের আগ্রহ অনুযায়ী তাদের ক্ষমতায়নও করা হবে৷ প্রয়োজনে তারা রুয়ান্ডাকে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যেও বেছে নিতে পারবেন৷’
গত ১৪ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দিয়েছে রুয়ান্ডা। পরে এই বিষয়ে পার্লামেন্টে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও। পার্লামেন্টকে বরিস জনসন বলেছেন, অনিয়মিত উপায়ে অভিবাসন ঠেকাতে এই ব্যবস্থা।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলের সফরকালে এক বিবৃতিতে রুয়ান্ডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিনসেন্ট বিরুতা বলেন, ‘আশ্রয়প্রার্থী ও অভিবাসীদের থাকতে দেয়ার জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের সঙ্গে এই নতুন অংশীদারিত্ব চুক্তিকে রুয়ান্ডা স্বাগত জানায়।
অনিয়মিত উপায়ে আগতদের শুধু রুয়ান্ডায় পাঠানো নয়, অভিবাসন বন্ধেও কড়া পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছেন বরিস জনসন৷
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন অভিবাসন বন্ধে দেশটির নৌবাহিনী এখন থেকে এই জলপথে টহল দেবে। জনসন বলেন, ‘এখন থেকে রয়্যাল নেভি সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কাছ থেকে অভিযানের কমান্ড নিজেদের কাছে নেবে। কোনো নৌকা যাতে নজরদারির বাইরে যুক্তরাজ্যে ঢুকে না পড়ে তা নিশ্চিত করা হবে তাদের লক্ষ্য ও টহল বাড়ানোর জন্য নৌকা, উড়োজাহাজ ও নজরদারি যন্ত্র সংগ্রহে অতিরিক্ত তহবিলের ঘোষণাও দেন।
তিনি বলেন, ‘যারা এসব নৌকা পরিচালনা করে তাদের কাছে এটা একটা পরিস্কার বার্তা৷ কেউ যদি অন্যের জীবন হুমকির মুখে ফেলে তাহলে তার নিজের জীবন জেলের ঝুঁকিতে পড়বে৷’
যেসব আশ্রয়প্রার্থীদের পাঠানো হবে:
গত বছর পাড়ি দিয়ে আসা ২৮ হাজার অভিবাসী ও শরণার্থী ব্রিটেনে পৌঁছান৷ এভাবে অনিয়মিত পথে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের একটি অংশকে রুয়ান্ডায় পাঠাতে চায় যুক্তরাজ্য সরকার৷
পরিকল্পনা অনুযায়ী যুক্তরাজ্যের দেয়া অর্থে একটি আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তুলে রুয়ান্ডা। একজন মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাদের মূল পরিকল্পনা আশ্রয়প্রার্থী পুরুষদের রুয়ান্ডায় পাঠানো৷ যুক্তরাজ্য সরকারের মতে, এই উদ্যোগের ফলে অভিবাসীরা অনিয়মিত উপায়ে যুক্তরাজ্য আসতে নিরুৎসাহিত হবেন৷
প্রসঙ্গত, ফরাসী উপকূল থেকে যুক্তরাজ্য পর্যন্ত ইংলিশ চ্যানেলে সবচেয়ে সরু অংশের দূরত্ব ৩২ কিলোমিটার৷ ছোট ছোট নৌকায় বিপদজনক ঢেউ পেরিয়ে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা প্রতিনিয়তই এই পথ অতিক্রমের চেষ্টা করেন৷ ২০২১ সালে সাড়ে ২৮ হাজারের বেশি অভিবাসী ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়েছিল। এ সংখ্যকে এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল এতদিন ধরে। এই বছর আগের চেয়ে দিগুণ অভিবাসনপ্রত্যাশী ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করেছে।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি