সব
সুইডেন এবং ফিনল্যান্ড রবিবার ন্যাটো সদস্যপদ পাওয়ার জন্য আবেদন করার কথা নিশ্চিত করেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে এ ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিল তারা।
সুইডেনের ক্ষমতাসীন সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা বলেছে, তারা পশ্চিমাদের নিরাপত্তা জোটটিতে যোগদানকে সমর্থন করেছে। এর মাধ্যমে দেশটির জন্য ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পথ প্রশস্ত হলো।
ফিনল্যান্ড আনুষ্ঠানিকভাবে জোটে যোগদানের আবেদন করার কথা বলার পরেই সুইডেনের ঘোষণা আসে।
রাশিয়া ন্যাটোকে তার জন্য নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখছে এবং সুইডেন ও ফিনল্যান্ডকে ‘পরিণতির’ ব্যাপারে সতর্ক করেছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সুইডেন নিরপেক্ষ ছিল। দুই শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে কোনো সামরিক জোটে যোগ দেওয়া এড়িয়ে গিয়েছে দেশটি।
ফিনল্যান্ডের সঙ্গে রাশিয়ার দীর্ঘ ১,৩০০ কিমি সীমান্ত রয়েছে। এখন পর্যন্ত দেশটি তার পূর্বদিকে শক্তিশালী প্রতিবেশীকে বিরোধিতা করা এড়াতে ন্যাটোর বাইরে থেকেছে।
এক বিবৃতিতে, সুইডেনের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট দল বলেছে, তারা ন্যাটোর সদস্যপদ পেতে কাজ করবে। এটি দেশটির জনসাধারণ এবং বেশিরভাগ বিরোধী দল সমর্থন করে। সম্ভবত কয়েক দিনের মধ্যেই আনুষ্ঠানিক আবেদন করবে। তবে সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটরা এ-ও বলেছে, জোটের সদস্য হলেও তারা পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন বা ন্যাটো ঘাঁটি রাখার বিরোধী।
সংবাদ সম্মেলনে সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন বলেন, তার দল মনে করে ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়া ‘সুইডেন এবং সুইডিশ জনগণের নিরাপত্তার জন্য সর্বোত্তম’।
‘আমাদের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটদের জন্য এটা স্পষ্ট যে সামরিক জোট নিরপেক্ষ অবস্থান সুইডেনের কাজ ভালোভাবেই চালিয়ে নিয়েছে। কিন্তু আমাদের উপসংহার হল যে এটি ভবিষ্যতে আমাদের কাজ চালাবে না,’ যোগ করেন ম্যাগডালেনা অ্যান্ডারসন।
সুইডিশ প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, সুইডেন যদি বাল্টিক অঞ্চলের একমাত্র অ-ন্যাটো দেশ হয় তবে সে অরক্ষিত অবস্থানে পড়বে।
রবিবারই ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নিনিসটো এর আগে নিশ্চিত করেন, তার দেশও ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করবে। তিনি এটিকে একটি ‘ঐতিহাসিক দিন’ বলে অভিহিত করেন।
ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে ইতিমধ্যেই কথা বলেছেন। নিনিসটো বলেছেন, তিনি রাশিয়াকে এটি সরাসরিই বলতে চান। পুতিন এর আগে ফিনল্যান্ডকে বলেছিলেন, ন্যাটোতে যোগ দেওয়া ‘ভুল’ হবে।
এর আগে ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সানা মারিন বলেছিলেন, ন্যাটো জোটে যোগ দেওয়া নিয়ে তাঁর দেশের কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই বলেই মনে করছেন তিনি। মারিন বলেন, ‘ফিনল্যান্ড বা সুইডেনের সদস্যপদ নিয়ে কোনো সমস্যা হতে পারে, আমাদের কাছে ন্যাটোতে এমন কোনো ইঙ্গিত আসেনি। আমরা এরই মধ্যে অত্যন্ত আন্তঃসংযুক্ত এবং আমরা ন্যাটোর ঘনিষ্ঠ অংশীদার। ’
এদিকে প্রেসিডেন্ট নিনিসো জানিয়েছেন, তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যিপ এরদোয়ানের সঙ্গে আবারও আলোচনা করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, এক মাস আগে কথা হওয়ার সময় এরদোয়ান ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগদানকে সমর্থন করবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু এখন তুরস্ক আপত্তি জানাতে পারে এমন খবরে তিনি ‘হতভম্ব’ বোধ করছেন। সূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, এনডিটিভি
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি