সব
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির আপাতত কোনো লক্ষণ নেই। বিভিন্ন উপজেলা প্লাবিত হওয়ার পর এখন সিলেট মহানগরীর বিভিন্ন এলাকাও পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। উজানের ঢল আর বৃষ্টি না থামায় পরিস্থিতি মোড় নিচ্ছে চরম দুর্ভোগের দিকে।
জানা গেছে, অব্যাহত পানিবৃদ্ধির কারণে সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মানুষের রাত কেটেছে নির্ঘুম। বাসাব-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় মানুষের ভোগান্তির যেন কোনো শেষ নেই।
সিলেট আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, টানা কয়েকদিন ধরে সিলেটে বৃষ্টি হচ্ছে। একদিকে ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাব ছিল, অন্যদিকে শুরু হয়েছে বর্ষা। মাঝারি, ভারী আর অতিভারী বৃষ্টির কবলে পড়ে সিলেটে এখন বন্যার যাতনা। এর সাথে যুক্ত হয়েছে উজানে ভারত থেকে নেমে আসা ঢল।
বৃষ্টি আর ঢলের কারণে সিলেটের নিম্নাঞ্চলগুলো এখন পানির নিচে। সিলেট সদর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও জৈন্তাপুর উপজেলায় লাখো মানুষ এখন পানিবন্দি। এসব উপজেলার প্রধান কয়েকটি সড়কও তলিয়ে গেছে। ফলে গ্রাম থেকে উপজেলা সদর কিংবা উপজেলা সদর থেকে জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে মানুষের ঘরবাড়ি, বাজার, দোকানপাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সব।
এদিকে, গতকাল সোমবার থেকে পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে শুরু করে। সুরমা নদীর পানি বাড়তে থাকায় এর তীরবর্তী সিলেট নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করে। নগরীর শাহজালাল উপশহর, সোবহানীঘাট, কালীঘাট, চাঁদনীঘাট, ছড়ারপাড়, শেখঘাট, তালতলা, কলাপাড়া, মজুমদারপাড়া, মাছিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। সময় গড়ানোর সাথে সাথে নতুন নতুন এলাকায় ঢুকছে পানি।
গত রাতে ক্রমেই পানি বাড়তে থাকায় নগরীর বিভিন্ন এলাকায় মানুষ নির্ঘুম রাত পার করেন। নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি জিনিসপত্র সরিয়ে নেওয়া, নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার নিয়ে চরম ব্যস্ত ছিলেন নগরবাসী। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় যারা কয়েক তলা ভবনের নিচতলার বাসিন্দা, তাদেরকেই সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
নগরীর কলাপাড়ার বাসিন্দা আফজাল আহমদ বলেন, ‘দুর্ভোগের শেষ নাই! বাসায় পানি ঢুকে পড়েছে, রাতে কেউ ঘুমায়নি। জরুরি জিনিসপত্র আরেক জায়গায় নিয়ে রেখেছি।’
নগরীর ছড়ারপাড়ের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এই পরিস্থিতির জন্য বৃষ্টি আর উজানের ঢলের ভূমিকা আছে সত্য। কিন্তু সুরমা নদীর নাব্যতা সংকট, নগরীর ড্রেন, নালা, ছড়া পরিষ্কার না থাকা, ময়লা-আবর্জনা ফেলে এগুলোর গতিপথ আটকে দেওয়া, কর্তৃপক্ষের যথাযথ নজরদারির অভাব এসবও কিন্তু এই দুর্ভোগের জন্য দায়ী।’
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৃষ্টি যদি না থামে, তাহলে পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা কম। বৃষ্টি থেমে আকাশে রোদের ঝিলিক দেখা গেলে পানি দ্রুত নেমে যাবে। না হয় দুর্ভোগ পোহাতে হবে দীর্ঘ সময়ের জন্য।
পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি