শ্রীলঙ্কার এক শহরে কারফিউ

;
  • প্রকাশিত: ২০ এপ্রিল ২০২২, ৫:৪৩ অপরাহ্ণ | আপডেট: ৪ বছর আগে

শ্রীলঙ্কার মধ্যাঞ্চলীয় শহর রামবুক্কানায় পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হওয়ার পরদিন বুধবার শহরটিতে কারফিউ জারি করে দেশটির পুলিশ। এপ্রিলের শুরুর দিকে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর পুলিশ মঙ্গলবার প্রথমবারের মতো তাজা গুলি ব্যবহার করে। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কায় অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকরা।

রামবুক্কানা শহরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও তাজা গুলি ছুড়ে জ্বালানি তেলের দাবিতে বিক্ষোভ করা লোকজনকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

গুলিতে মারা যান ৪২ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। সংঘর্ষে প্রায় ৩০ জন আহত হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা বসন্ত কুমারা বুধবার এএফপিকে বলেন, ‘আমার পায়ে ও হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। আমি পুলিশকে অনুরোধ করেছিলাম আমাকে না মারতে, কিন্তু তারা শোনেনি। মানুষ ক্ষুব্ধ। আমরা সবাই গরিব মানুষ। মৌলিক অধিকারের জন্য লড়াই করছি। ‘

রাজধানী কলম্বো থেকে প্রায় ৯৫ কিলোমিটার দূরে রামবুক্কানা শহর। বুধবার সকাল থেকে শহরটির দোকানপাট বন্ধ থাকে।

প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে বলেছেন, তিনি পুলিশের গুলিতে একজনের মৃত্যুর ঘটনায় ‘গভীরভাবে ব্যথিত’। জনগণের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে বাধা দেওয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। প্রেসিডেন্ট টুইটারে লিখেছেন, পুলিশ ওই ঘটনার ‘নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ তদন্ত করবে’।

পুলিশ দাবি করেছে, জনতা একটি জ্বালানি ট্যাংকারে আগুন ধরিয়ে দিতে গেলে তারা গুলি করতে বাধ্য হয়েছিল। শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলগুলো পুলিশের এই দাবি নাকচ করে দিয়েছে। পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য রোহিনী কুমারী উইজেরাথনা বলেন, ওই লোকেরা তেলের ট্যাংকার পুড়িয়ে দেওয়ার মতো আত্মঘাতী কাজ করবে না।

সরকারি হিসাব অনুযায়ী রামবুক্কানায় ১১ জন পুলিশ কর্মকর্তাসহ কমপক্ষে ২৯ জন আহত হয়েছে।

মঙ্গলবারের সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কলম্বোতে অবস্থানরত বিদেশি কূটনীতিকরা। যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জুলি চুং বলেছেন, ‘এ ঘটনার একটি পূর্ণাঙ্গ, স্বচ্ছ তদন্ত অপরিহার্য। জনগণের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার অবশ্যই সমুন্নত রাখতে হবে। ‘

ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ হাল্টন সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে সরকারকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

১৯৪৮ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকে শ্রীলঙ্কা সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক মন্দা মোকাবেলা করছে। জ্বালানির অভাবে দেশটিতে নিয়মিত লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। দেখা দিয়েছে খাদ্য ও প্রয়োজনীয় ওষুধের সংকট, যা ব্যাপক জন-অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকটের কারণে মঙ্গলবার চিকিৎসাকরা পর্যন্ত রাস্তায় নেমে আসেন। জ্বালানির দাম বাড়ানোর কারণে গাড়িচালকরা গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক এবং রেললাইন অবরোধ করেন। দেশজুড়ে সর্বস্তরের মানুষের বিশাল বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

সূত্র : এএফপি ও বিবিসি

এই সম্পর্কিত আরও খবর...

পোর্টাল বাস্তবায়নে : বিডি আইটি ফ্যাক্টরি